ইতিহাস
মডেল অ্যাকটিভিটি টাস্ক
পার্ট ৩
ক্লাস ১০
১. টীকা লেখ
ক)হিন্দুমেলা:-
ভারতীয় জাতীয় জাগরণে বাংলার কয়েকটি সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদের মধ্যে নবগোপাল মিত্রের "চৈত্রমেলা" যার পড়ে নাম হয় "হিন্দুমেলা" ছিল অন্যতম। ১৮৬৭ সালে এটি গঠিত হয় এবং এর স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ১৩ বছর।
উদ্দেশ্য:-
i) দেশীয় ভাষা চর্চা করা।
ii) স্বদেশী ভাবধারায় দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করা।
iii) এ দেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা সংস্কৃতির প্রসার।
বৈশিষ্ট্য:-
i) এই সংগঠনটি সকল সদস্য ছিল হিন্দু।
ii) এই মেলায় স্বরচিত কবিতা সংগীত পরিবেশিত হতো।
খ) বসু বিজ্ঞান মন্দির:-
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু "বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা" করেছিলেন। প্রধানত জীব ও জড় বস্তুর বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করা ছিল এর প্রধান উদ্দেশ্য। এটি বোস ইনস্টিটিউট নামেও পরিচিত।
এখানে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বিদ্যা, এছাড়াও মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিদ্যা প্রভৃতি বিষয়গুলি নিয়ে গবেষণার সুযোগ আছে। উদ্ভিদের প্রাণ আছে তার প্রমাণ এ প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জগদীশচন্দ্র বসুর বহু পান্ডুলিপি ও মিউজিয়াম এখানে আছে। এখানকার কৃতি গবেষকরা এখান থেকে এস. এস. পুরস্কার, ভাট নাগর পুরস্কার, হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা পুরস্কার পেয়ে থাকেন।আর্থিক সাহায্য ও প্রাথমিক পর্বে তিনি তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। "বসু বিজ্ঞান মন্দির" বাঙালির একটি গর্ব যা ভারতবর্ষকে নতুন দিশা দেখিয়েছিল।
গ) তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার:-
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় মেদিনীপুরের তমলুকের ৩ জন বিশিষ্ট নেতা ছিলেন অজয় মুখার্জি, সুশীল ধারা, ও সতীশ সামন্ত। ১৯৪২ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠিত হয়। এয়ার সর্বাধিনায়ক ছিলেন বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত।
সতীশচন্দ্র সামন্ত দীর্ঘ ২১মাস এই সরকারের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকারকে অচল করে স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করে রেখেছিলেন। পরবর্তীতে গান্ধীজীর নির্দেশে এই সরকার ভেঙে দেওয়া হয়।
২. ভারতমাতার চিত্র কিভাবে পরাধীন ভারতে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল?
উত্তর:
ভূমিকা:- ব্রিটিশ শাসিত পরাধীন ভারতবর্ষে চিত্র শিল্পী গণ চিত্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ফুটিয়ে তোলেন। ভারতীয় জাতীয়তাবোধ সৃষ্টিকারী চিত্র গুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান ছিল অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ভারতমাতার চিত্র। চিত্রে ভারতমাতা হলেন ভারতবর্ষের প্রতীক।
.
ভারতমাতার অলঙ্কন:- ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গমাতার চিত্র অঙ্কন করেন। পরে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের স্বদেশী আন্দোলনের আবহে তা ভারতমাতা রূপে খ্যাতি লাভ করে।
উপসংহার:-ভারতমাতা ভারতবর্ষের প্রতীক। তিনি তার সন্তানদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, দীক্ষা প্রদান করেন। ভারতমাতা চিত্র টি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে জাতীয়তাবাদের প্রতীকে পরিণত হয়। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে ভারতমাতা চিত্রটি জনসাধারণের মধ্যে জাতীয়তাবোধের সঞ্চার করে।
৩. ছাপাখানার বিস্তার ও শিক্ষার প্রসারের সম্পর্ক সমানুপাতিক- উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিংশ শতকের প্রথম ভাগে বাংলার শিক্ষা বিস্তারের প্রসঙ্গে উক্তিটির ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
ভূমিকা:- অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে ইউরোপীয় খ্রিস্টান মিশনারীদের মাধ্যমে বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এই ছাপাখানা গুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রেক্ষাপট:-বঙ্গদেশে আধুনিক ছাপাখানা আসার পূর্বে হাতে লেখা বইপত্রের প্রচলন ছিল। এই হাতে লেখা বইয়ের মূল্য অধিক ছিল তাই নিম্নবিত্ত দারিদ্র সমাজে শিক্ষার প্রসার তেমন ঘটেনি।
ছাপা বইয়ের বাজার:- উনবিংশ শতকের শুরুতে ছাপাখানায় ছাপানো বইপত্র প্রচুর পরিমাণে আসতে শুরু করে। প্রচুর বইয়ের যোগান ও সস্তা দামের জন্য মধ্যবিত্ত, দারিদ্র শিক্ষার্থী ও পাঠকরা এই ছাপাখানায় ছাপানো বইয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ফলে বাংলায় ব্যাপক শিক্ষার প্রসার ঘটে।
পাঠ্যপুস্তকের সরবরাহ:- ছাপাখানায় মুদ্রিত বই পত্র বিনামূল্যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি। এর ফলে শহর ও গ্রামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যেসব সাধারণ মানুষ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল তাদের হাতে হাতে ছাপাখানার মুদ্রিত বই পৌঁছে যায়।
উপসংহার:-পরিশেষে বলা যায় যে, ছাপাখানার মুদ্রিত বিপ্লবের ফলে শিক্ষার প্রসার, সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসার ও ঘটে। মুদ্রিত বিপ্লবের ফলে বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক প্রবর্তন সম্ভব হয়। এইভাবে ছাপাখানার বিস্তার ও শিক্ষার বিস্তার সমান্তরালভাবে চলতে থাকে।
৪. একটি ভারতের মানচিত্রে প্রদত্ত স্থান গুলি চিহ্নিত করো-
মিরাট, এলাহাবাদ, ব্যারাকপুর, দিল্লি, ঝাঁসি, শ্রীরামপুর বোলপুর।
0 Comments