দশম শ্রেণীর বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এর সমস্ত প্রশ্ন এবং উত্তর পার্ট ৩


 


দশম শ্রেণীর বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক এর সমস্ত প্রশ্ন এবং উত্তর পার্ট ৩

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখাে :


১. তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়।- 'বহরুপী গল্পের আলােকে উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।

উত্তর :- সুবোধ যোষ রচিত বহুরূপী গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা বিশেষ চরিত্র গুনে সামান্য বহুরূপী থেকে যথা্থ "শিল্পীর মর্যাদায় উন্নীত হয়েছেন তিনি।

বিরাগীর সাজ গ্রহণ করে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি জগদীশ বাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন তার সাজ এবং অভিনয় এত নিখুত ছিল যে তার পরিচিতরাও তাকে চিনতে পারেননি। জগদীশবাবুর কাছ থেকে 101 টাকা রােজগারের সুযােগ থাকলেও হরিদা এই সুযােগ গ্রহণ করেননি ।কারণ তিনি তখন বিরাগী আর এই অর্থ-সম্পদের মােহ মুক্ত টাকাটা নিলে তার বিরাগী সাজের মর্যাদা ক্ষয় হয় শিল্পীর কাছে শিল্পের মর্যাদা টাই বড়। ভার ব্যক্তিগত দারিদ্র দুঃখ-কষ্ট নিতান্তই তুচ্ছ। তাই একজন বিরাগীর মতােই তিনি অর্থের লােভ বর্জন করেন ।

২. 'ঘুচাব এ অপবাদ, বধি রিপুকুলে।- বক্তা কে? কোন অপবাদের কথা তিনি বলেছেন? উক্ত অপবাদ ঘােচানাের জন্য তিনি কীভাবে প্রস্তুত হলেন ?

উত্তর :- মাইকেল মধুসূদন দত্ত বীরােচিত মেঘনাদবধ কাব্যের অন্তর্গত অভিষেক কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা ত্রিভুবন বিজয়ী মেঘনাদ।
লংকা পুরি কে শত্রু সৈন্যদল সবদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে এবং সামান্য নর রামচন্দ্রের হাতে বীরবাহুর মৃত্যু কে অপবাদ বলা হযেছে।
বক্তা রাবণ পুত্র মেঘনাদ ধাত্রী মাতার ছদ্মবেশে থাকা লক্ষী দেবীর কাছ থেকে জানতে পারেন যে, তুৃচ্ছ মানব রামচন্দ্র তার মায়াবী ক্ষমতার জোরে পুনরায় জীবিত হয়ে মেঘনাদের প্রিয়ানুজ বীরবাহু কে যুদ্ধক্ষেত্রে হত্যা করেছেন। এই সংবাদটি পেয়ে লঙ্কেশ্বর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। লঙ্কা শত্রু পরিবেষ্টিত, এই অবস্থায় লঙ্কায় ত্রিলােক জয়ী বীর পুত্র ইন্দ্রজিৎ প্রমােদ উদ্যানে বামাদের সঙ্গে আমােদ-প্রমােদে মন্ত। এটা বড় লঙ্কার ব্যাপার কোন বীরের পক্ষে এটি একটি বড় অপবাদ।

 এই কারণে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে যাবার জন্য তাড়াতাড়ি রথ আনার আদেশ দেন রথ আসার সঙ্গে সঙ্গে মেঘনাথ রণসজ্জায় সজ্জিত হয়ে ওঠেন। কার্তিক তারকাসুর বধের জন্য যেমন ভাবে উঠেছিলেন বা বৃহল্পলারুগী অর্জুন বিরাট রাজের গােধন উদ্ধারের জন্য যেভাবে রণসাজে সেজেছিলেন, ঠিক সেই ভাবেই সেজে ওঠেন ইন্দ্রজিৎ, এরপর প্রমিলা সুন্দরীর কাছে বিদায় গ্রহণ করে তিনি রাজসভায় রাবণ সমীপে উপনীত হয়ে রাঘবের বধের অনুমতি প্রার্থনা করেন

৩. 'তোমাদের কাছে আমি লজ্জিত।'— বক্তা কাদের কাছে কেন লজ্জিত তা সিরাজদ্দৌলা নাট্যাংশ অনুসরণে আলােচনা করাে।


উত্তর :- শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা সিরাজউদ্দৌলা নাট্যাংশের অন্তর্গত প্রশ্নস্কৃত বাক্যটিতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ফরাসিদের কাছে লজ্জিত হয়েছেন।

 ফরাসি বণিকরা বহুদিন থেকে বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য করছে।ঔপনিবেশিক প্রতিযোগিতার কারণবশত ইংরেজ ও ফরাসিরা চিরশত্রু। এই শ্রুতা বাংলার বুকেও তারা বজায় রেখেছে।ইংরেজরা নবাবের অনুমতি না নিয়ে চন্দননগর অধিকার করেছে।ফরাসি বাণিজ্যকুঠি গুলি তাদের ছেড়ে দেওয়া হােক বলে দাবি জানাছে। এ নবাবের কাছে দুঃখের ঘটনা। ইংরেজ ফরাসি অন্তর্কলহ অনেক পুরনাে নবাব তা জানেন। সুতারাং নবাবের কাছে ইংরেজদের হঠকারিতা, আক্রমণ এবং দখলদারির প্রতিকার চেয়ে ফরাসিদের দূত হয়ে এসেছেল মসিয়ে লা। কিন্তু নবাব এর প্রতিকারের উদ্যোগ এখনই নিতে অপারগ বলে মসিয়ে লা কে জানান। কিন্তু যুদ্ধ করে নবাবের বহু লােকক্ষয় হয় ও অর্থ ব্যয় হয়েছে। তাছাড়া এই ইংরেজদের ষড়যন্ত্রে নবাব। অতিরিক্ত বিরক্ত হিয়েছেন এবং আসন্ন যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই অবস্থায় নিজের রাজ্যের নিরাপত্তা চিন্তার পরিবর্তে তিনি ফরাসিদের সাহায্য করবার জন্য ইংরেজদের সঙ্গে নতুন করে অবিরুদ্ধে যেতে চাইছেন না । ফরাসিদের বণিকদের প্রতিনিধি মসিয়ে লা কে এই সাহায্য হীনতার কথা জানাতে বক্তা সিরাজ লজ্জিত

৪. ওই ভাঙা-গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর?- কবির এই মন্তব্যটি কোন ইঙ্গিতবাহী ?


উত্তর :- প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা প্রলয়োল্লাস কবিতা থেকে গৃহীত।

আলােচ্য কবিতায় কবি কালবৈশাখীর উপময় দেশের যুব শক্তির প্রাণবন্ত এবং ভেজোদীন্ত স্বরুপকে তুলে ধরেছেন যুগ যুগ ধরে তিনি লক্ষ্য করেছেন কোন অরাজক পরিস্থিতি চিরস্থায়ী হয় না। সমকালীন সময়ে তিনি দেখেছেন দুর্নীতি ইংরেজ অত্যাচার, ধর্মীয় ভন্ডামি। তাই নিয়ে এই অবস্থার অবসান চান| এসকল অবস্থার অবসান ঘটাতে পারে তরুণ দল।
কবির ভরসা আছে এদের ওপর। শিবের নটরাজ প্রলয় নৃত্যের মধ্যা কিংবা যুবসমাজের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের নেপথ্যে লুকিয়ে আছে সত্য-সুন্দর প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ।

তাই কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই প্রলয়ংকর ভাঙ্গন দেখে ভয় পেতে নিষেধ করেছেন। কারণ, পুরনাে-অসুন্দের-প্রবীণ ধ্বংস না হলে চিরসুন্দর নবীন প্রাণের প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সুষ্ট-স্থিতি-প্রলয় ধারক মহাকাল।তাই তিনি যে ধ্বংসের খেলা করেছেন তা দেখে ভয় না পেয়ে সাহস নিয়ে সকলকে সামনের দিকে এগিয়ে চলতে হবে।

৫. 'বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলআনাই বজায় আছে। বাবুটি কে? তার স্বাস্থ্য এবং যােলােআনা শখের পরিচয় দাও।

উত্তর :- বাবুটি বলতে এখানে কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত পথের দাবি রচনা অংশের গিরীশ মহাপাত্রের কথা বলা হয়েছে ।

গিরিশ কে দেখলে মনে হয় কি একটা দুরারোগ্য রােগ যেন তাকে প্রবল ভাবে গ্রাস করতে চায়। তবে তার সাজপোশাকের সৌখিনতা বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো।

তার মাথার সামনের দিকে বড় বড় চুল। কিন্তু ঘাড় কানের দিকে একেবারে নেই বললেই চলে । মাথায় চেরা সিথি, কঠিন ও রুমচুলে লেবুর তেল ঢেলেছেন পর্যাপ্ত পরিমাণে ও তার নিদারুণ গন্ধে ঘর ভরে উঠেছে। তার গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবির বুক পকেট বাঘ আঁকা রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে।
পড়নে বিলাতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সক্ষম ধুতি, পায়ে সবুজ রঙের ফুল মােজা হাঁটুর উপরে লাল ফিতা দিয়ে বাঁধা বার্নিশ করা পাম্প ও মজবুত ও টেকসই করার জন্য আগাগােড়া লােহার নাল দিয়ে বাঁধানাে। হাতে একগাছি হরিণের শিং এর হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি। দিন কয়েকের জাহাজের ধকলে সবকিছুই নােংরা হয়ে উঠেছে।

Post a Comment

0 Comments