মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দশম শ্রেণি বাংলা Part 2:
1. ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো :(1.1) তপন গভীরভাবে সংকল্প করে —
(ক) আর কখনাে লেখা ছাপানাের জন্য নিজে কোথাও যাবেনা। (খ) মেসােকে নয়, মাসিকেই লেখা জমা দেবে। (গ) ডাকে লেখা পাঠাবে। (ঘ) তপন নিজে গিয়ে লেখা জমা দেবে।
উওর: (ঘ) তপন নিজে গিয়ে লেখা জমা দেবে ।
(1.2) “ডুবে ছিল ধ্যানে – কত দিনের ধ্যান ?(ক) এক মুগ। (খ) শতবর্ষ (গ) হাজার বছর। (ঘ) যুগের পর যুগ ধরে
উওর: (গ) হাজার বছর।
(1.3) “আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল –(ক) ঝরনা কলম (খ) রিজার্ভার পেন (গ) কুইল। (ঘ) স্টাইলাস ।
উওর: (ক) ঝরনা কলম
(1.4) যে কর্তা অন্যকে দিয়ে কাজ করায়, সে হল -(ক) প্রযোজ্য কর্তা। (খ) প্রযোজক কর্তা। (গ) উহা কর্তা । (ঘ) অনুক্ত কর্তা ।
উওর: (ক) প্রযোজ্য কর্তা।কম-বেশি ২০ টি শব্দে উত্তর লেখো ।
(2.1) কে কার বুকের থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ?
উওর: রবীন্দ্রনাথের আফ্রিকা কবিতা আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নেয়ার কথা বলেছে। আদিম পৃথিবীর বুকে ঘটে যাওয়া ভৌগোলিক বিবর্তনকে এখানে কবি ফুটিয়ে তুলেছে। বৈজ্ঞানিকদের মতে – টেকটনিক প্লেটগুলোর সংঘাতের ফলেই এশিয়ার মূল ভূখন্ড থেকে আফ্রিকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কবি এরই কাব্যিক রূপ দিয়ে বলেছে রুদ্র সমুদ্র মূল ভূখণ্ড থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে যেন বনস্পতির নিবিড় পাহারায় কৃপণ আলোর অন্তরালে তাকে নিক্ষেপ করেছিল।
(2.2) ক্যালিগ্রাফিস্ট কাদের বলে ?
উওর: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ অনুসারে মধ্যযুগ এবং তার পরবর্তী কালে যারা ছিলেন ওস্তাদ কলমবাজ বা লিপি কুশলী যে সমস্ত লিপিকর দের লেখা পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়, তাদের বলা হতো ক্যালিগ্রাফিস্ট।
(2.3) “বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠা কথাটা” – কোন কথা?
উওর: জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লিখেছিলো তপন। গল্পটি ছিল তার স্কুলে ভর্তি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে। তা ছোটমাসির হাতে পড়ে এবং ছোট মাসি তা নিয়ে বেশ হইচই করে। তার লেখক স্বামীকে গল্পটি দেখান । মাসির অনুরোধে মেসো তপনকে কথা দেন সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তার গল্প ছাপিয়ে দেবেন। এই কথাটাই চায়ের টেবিলে উঠেছিল।(2.4) সম্বন্ধপদকে কারক বলা যায় কিনা কারণসহ লেখো।উওর: ক্রিয়াপদের সাথে সম্পর্ক না রেখে যে নামপদ বাক্যস্থিত অন্য পদের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয় তাকে সম্বন্ধ পদ বলে। যেমন রামের ভাই বাড়ি যাবে। এখানে রামের সঙ্গে ভাইয়ের সম্পর্ক আছে কিন্তু যাবে ক্রিয়ার সাথে সম্বন্ধ নেই, ক্রিয়ার সঙ্গে সম্বন্ধ পদের সম্বন্ধ নেই বলে সম্বন্ধ পদ কে কারক বলা হয় না।
প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কম-বেশি ৬০ শব্দে উত্তর লেখাে :
(3.1) পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে। – তপনের এমন মনে হওয়ার কারণটি লেখাে।
উওর: প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর গল্প জ্ঞানচক্ষু এর কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন।
বিশাল পৃথিবীতে স্বল্প বাস্তবতাবোধ নিয়ে আর পাঁচটা শিশুর মতোই তার পথচলা। লেখকদের সম্পর্কে তার ধারণা সেকথাই বলে। সেই তপন তার নতুন লেখক মেসো মশাইয়ের সান্নিধ্যে এসে তার প্রতিভাকে বিকশিত করে কাঁচা হাতে লিখে ফেলে একটা আস্ত গল্প। সেই গল্প মেসোর হাতে গেলে মেসো তপনের ও বাড়ির লোকেদের মন রাখার জন্য তা সামান্য কারেকশন করে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন এবং লেখা টি নিয়ে যান। এর বেশ কিছুদিন পর সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় গল্পটি ছাপানো হয়। তপনের কাছে এই ঘটনাটি অলৌকিক বলে মনে হয়েছিল।
অলৌকিক শব্দটির আভিধানিক অর্থ হলো মানুষের পক্ষে যা সম্ভব নয় বা পৃথিবীতে সচরাচর যা ঘটে না ।এক্ষেত্রে ছোট্ট তপনের লেখা গল্প যেভাবে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছিল সেটাই অলৌকিক। আসলে তপনের লেখক সম্পর্কে ধারণার অবসান , গল্প লেখা , মেসোর হাত ধরে ছাপার অক্ষর এ প্রকাশিত হওয়া প্রভৃতি ঘটনাগুলোই তার কাছে অলৌকিক।(3.2) “আমরা ভিখারি বারো মাস”- এই উপলব্ধির মর্মার্থ লেখো ।উওর: কবি শঙ্খ ঘোষের আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত। এখানে আমরা বলতে বর্তমান বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ও মৌলবাদী শক্তির অত্যাচারে জর্জরিত সাধারণ শান্তিকামী ও শ্রমজীবী মানুষদের বোঝানো হয়েছে।
নিজেদের সর্বদা ভিখারি মনে করার কারণ:- এক্ষেত্রে আমরা একটি বিশেষ শ্রেণী চরিত্র, দেশকাল ভেদে যারা সর্বদাই এক। সাধারণ শ্রমজীবী এই মানুষগুলি সমাজে নিচের তলার মানুষ হিসাবে পরিচিত। এরা সভ্যতার ধারক ও বাহক। কিন্তু এরাই থাকে সবচেয়ে অন্ধকারে। সমাজের তথাকথিত উচ্চবিত্তের দয়া দাক্ষিণ্যের উপর নির্ভর করে এদের মরা বাচা ।
শাসকদের ক্ষমতার বদল হলেও এদের দৃঢ়তার কোন বদল হয় না। সাধারণ মানুষ গুলি সর্বদায় বঞ্চিত থাকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে। আবার সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তি যখন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিশ্বময় উন্মাদনা সৃষ্টি করে , তখন সবার আগে এরাই আশ্রয় চ্যুত হয়ে পড়ে। এদের জীবনের ইতিহাস কোথাও লেখা হয়না আর যদিও বা লেখা হয় তবে তা ক্ষমতাবান ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে বিকৃত হয়ে পরিবেশিত হয় । এই সমস্ত মানুষরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিচারে ভিখারী নয় এরা সামাজিক দিক দিয়েও দিন শাসকের অবজ্ঞা, উপেক্ষা ও অবহেলার পাত্র।
4. কম-বেশি ১৫০ শব্দে নীচের প্রশ্নটির উত্তর লেখাে :
(4.1) “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই” প্রবন্ধ অনুসারে কালি তৈরি পর্বের বর্ণনাটি নিজের ভাষায় লেখাে।
উওর: কালি কলম এর অতীত সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক শ্রীপান্থ বাঁশের কলম তৈরির কথা বলেছেন। লেখক নিজেই কালি তৈরি করলেও মা ,পিসি দের সাহায্য নিতেন। প্রবন্ধে লেখক কালী তৈরীর দু’রকম পদ্ধতি বলেছেন – প্রথম পদ্ধতি হল ত্রিফলা, লোহার পাত ছাগলের দুধে ভিজিয়ে রাখতে হতো তারপর একটি লোহার দন্ড দিয়ে ভালো করে ঘষে নিতে হত। এই কালি এতটাই টেকসই হতো যে লেখার পাতা ছিরলেও কালি উঠত না ।
সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প আজকের পৃথিবীকে বিষাক্ত করে তুলেছে। মানুষের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন । এই সময়ে আমরা বিশেষ করে সাধারণ মানুষ এক ভয়ঙ্কর দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সামনের প্রতিকূল পথ ধরে এগিয়ে চলেছি। এছাড়া আমাদের সামনে আর কোন পথ নেই। ভাবি প্রজন্মকে রক্ষা করতে আমরা ব্যর্থ। প্রতিক্ষণে হানাদারি মৃত্যুর ভয়ে আমরা ভীত ,কিন্তু আমাদের এই দুঃখের ইতিহাস অলিখিত থেকে যাবে চিরকাল। রানার-এর বেদনার মতো কাল রাত্রের খামে চিরকাল তা আবদ্ধ থেকে যাবে, কবির আক্ষেপ।
বিশ্বাসের ভীত যেখানে আলগা হয়ে যায়, সেখানেই সংশয় সৃষ্টি হয় । কবি মনে করেন সারা পৃথিবীর ইতিহাসে সাধারণ মানুষের কথা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি, কারণ ইতিহাস কে নিয়ন্ত্রণ করে শাসক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আর সাধারণ মানুষের যদিও কোনো ইতিহাস থাকে তবে তা অস্পষ্ট এবং অর্ধসত্য । তাদের অসহায় বিপন্নতা কিংবা করুন পরিস্থিতির খোঁজ, শাসকের ইতিহাসে অনুপস্থিত বলেই – তথাকথিত বিকৃত ইতিহাস সম্পর্কে কবির এই সংশয়। লেখকদের কালি তৈরি দ্বিতীয় পদ্ধতিটি ছিল বেশ সহজ। বাড়িতে কাঠের উনুনে রান্না হতো তার তলায় কালি জমতো। সেই কালি লাউ পাতা দিয়ে তুলে নিয়ে পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নেয়া হতো কেউ কেউ এর মধ্যে হরিতকী ও পোড়া আতপ চাল গুড়ো করে নিত । সবশেষে খুন্তি কে লাল করে পুড়িয়ে সেই জলে ডোবালে জল ফুটে উঠত। ঠান্ডা হলে ন্যাকড়া দিয়ে ছেঁকে নিয়ে দোয়াতে ভরে নেয়া হতো এই কালি।
0 Comments